Tareef Hayat Khan

Architect-Researcher

  • Biography
  • Books
  • Journal
  • Conference
  • Teaching
  • Projects
  • Music
  • Sports
  • LifeClick to open the Life menu
    • Childhood
    • Midlife
    • Old age
  • DiaryClick to open the Diary menu
    • 7 Wonders I Achieved
    • 4 Sports I Explored
    • My 11 Tutors
  • Blog
  • Family Tree
  • Contact

My Life in Numbers: সংখ্যায় সংখ্যায় আমার জীবন

অঙ্ক আমার সবসময়ই প্রিয়। কিন্তু জীবনটাকে অঙ্কে মেলানো যায়না। তবে সেটাতো আর ছোটবেলায় বোঝার মত ক্ষমতা থাকেনা। তাই অঙ্কের প্রতি আমার ছোটবেলাকার সেই ভালোবাসাকেই স্মৃতি হিসেবে রেখে আমার আত্মজীবনীর শিরোনামটা মেলালাম। আমার মনে আছে আমাদের ছোটবেলায় কাউকে যদি জিজ্ঞেস করা হতো সে বড়ো হয়ে কি হবে, তার সম্ভবত সবচেয়ে সম্মানজনক উত্তর ছিলোঃ 'ডাক্তার' না হয় 'ইঞ্জিনিয়ার'। আমি পরে চিন্তা করে এর একটা উত্তর দাঁড় করিয়েছিলাম। আমার বয়স আর আমার দেশের স্বাধীনতার বয়স প্রায় সমান্তরাল। আমরা সেই জেনারেশনের মানুষ যে সময় আমাদের দরকার ছিলো দেশ গড়ার কারিগর। মাথার কাজ করে যারা তাতে অবদান রাখবে কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী, দার্শনিক বা ভাবুকরা বোধহয় তার মধ্যে পড়েনা। প্রয়োজনীয়তার বিচারে ডাক্তার বা ইঞ্জিনায়ারই হয়তো ছিলো সর্বোচ্চ (অবশ্যই তখনতো আর এখনকার মত জ্ঞানবিজ্ঞানের এতো ধারা আবিষ্কৃত হয়নি)। এই দুই ক্ষেত্রেই বিজ্ঞানের ছাত্র হওয়া প্রয়োজন। আর বিশেষত অঙ্কে ভালো মাথা থাকলে তো পোয়াবারো। তাই অঙ্কে ভালো হওয়াটা ছিলো জরুরী। অঙ্কের ভিত্তিতেই ভালো ছাত্রত্ব নির্ভর করতো। আর তাই শুনতাম না কোন ‘ভালো’ ছাত্র বলছে আমি বড়ো হয়ে কবি হবো, শিল্পী হবো, ঐতিহাসিক হবো, ভূতত্ববিদ হবো, বা এমন কোন কিছু যাতে অঙ্কে খারাপ হয়েও অবদান রাখা যায়। আসলে জমানাটাই ছিলো এমন। তাই বলে আমি বলছিনা যে অঙ্কে খারাপ হওয়াটা গর্বের। অঙ্কে ভালো হলে অবশ্যই নিত্যদিনের কাজেও অনেক লাভ আছে। তাই অঙ্কে কিছুটা মাথা থাকাতে মনে হতো মানে মানে বেঁচে গেছি। তবে অনেক পরে বুঝলাম আসল বাঁচাটা হলো তখনই যখন অঙ্ককে আরো হাজারো বিষয় থেকে আলাদা না করে সব বিষয়কে একত্রে সমন্বিত ভাবে দেখতে শিখতে পারা যায়। জ্ঞানের সব শাখাই এতই নিবিড়ভাবে যুক্ত যে,শুধুমাত্র কোন একটা বিষয়ে দিগগজ ভেবে নিয়ে অন্যগুলোকে অবহেলা করা মানে নিজের জ্ঞানের দীনতাকেই প্রকাশ করে দেয়া। কেন আমরা এই পৃথিবীতে এসেছি, কেন আমি একটা বিশেষ সময়ে এসেছি, কেন আমি একটা বিশেষ বর্ণে, জাতিতে, দেশে, বা শহরে আবির্ভূত হলাম, কেন আমি একটা বিশেষ অর্থনৈতিক, সামাজিক বা সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে জন্ম নিলাম, সেগুলো জানার আগ্রহ বা প্রয়োজন যখন বাড়ে, তখন তা বোঝার জন্য যে জ্ঞান লাগে, প্রথাগত বিদ্যাচর্চার সবগুলো বিষয়ই তাতে প্রয়োজন। সাথে লাগে আর দু'টো ছোট্ট জ্ঞান, যা সব জ্ঞানের বড়, যেটা একটু পরেই বলছি। তাই এর পর ‘অঙ্কে ভালো’ সেটা বলে নিজেকে আর কাঙ্গাল প্রমান করতে চাইনা।

আসলে একটা বয়স পার করার পর অঙ্কতেও আর তেমন উতসাহও পাইনা, আর আসলে প্রয়োজনও বোধ করিনা। শুধু সেইটুকু জ্ঞানের সন্ধান করে যেতে চাই যাতে নশ্বর দেহটা হারিয়ে যাওয়ার আগে সেই সান্ত্বনাটুকু পেয়ে যেতে পারে যে নিজের সীমিত সামর্থের মধ্যে থেকে অবিনশ্বরের নির্দেশ পালনের চেষ্টার ত্রুটি করেনি। এটা সেই নির্দেশ যা আমাকে মনে করিয়ে দেয় সংসার ধর্মই মানুষের আসল ধর্ম। এটা পালনের জন্য হাতিয়ার মাত্র দুটো। অহম আর রিপু। দুটোই যেমন অবশ্য প্রয়োজনীয়, তেমনি, দুটোই মারাত্নক বিপজ্জনক। টেকনিক হচ্ছে, প্রথমতঃ অন্যের অহমে আঘাত হানা থেকে নিজেকে যথাসাধ্য বিরত রাখা; আর দ্বিতীয়তঃ রিপুকে, নিভানোর নয়, বরং নিয়ন্ত্রনে রাখার নিরন্তর সংগ্রামে রত থাকা। এই সেই দু'টো জ্ঞান। 

তবে সেটা অর্জন সাধনার মতই। অল্প বয়সে সেটা বোঝার মত পরিস্থিতি কম থাকে যখন এই নশ্বর শরীরের কাছে সবকিছুই অজেয় মনে হয়। শরীর পরাজিত হওয়া শুরু করলে তখনই হয়তো ভালোভাবে সেই অর্জনের পিছনে ছোটা শুরু হয়। আবার তা শুরু হলেই যে অর্জনের ঢেকুর তুলতে পারবো তাও না। কারন রিপুর চাপ অনির্বান। তাই বারবার ভুল হতেই থাকে। তাই আমরা কেউই বলতে পারিনা যে 'আমি পেরেছি' তাঁর নির্দেশ মোতাবেক চলতে, বা এখন থেকে পারবো। কারন অনির্বান এই রিপু নিয়ন্ত্রনের সাধনা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্রতিনিয়ত চলবে। আবার তারই ফাঁক দিয়ে দিয়ে আমাদের এই নশ্বর দেহটাকেও কিছু তৃপ্তি দিয়ে যেতে হয় নিয়ন্ত্রনের মধ্যে থেকেই। উভয় সংকট? হ্যাঁ তাই।  শরীরটা যে স্রষ্টাকে পাওয়ারও মাধ্যম, সেটাকে তো আর অনশনে রেখে পুরোপুরি মেরে ফেলা যাবেনা। শরীর মরে গেলে তো অবিনশ্বরের করুনা পাবার সাধনাও বন্ধ। তাই নাহয় করলাম ছোটখাটো লেভেলে কিছু জাগতিক অর্জনের চেষ্টাও, সীমার ভিতরে থেকেই। সামান্য কিছু সংখ্যায়ই নাহয় বাহন হিসেবে থাকলো আমার জীবনের সেই ঘটনাগুলো বর্ণনা করার একটা মাধ্যম হিসাবে।

লেখাটা একটু গুরুগম্ভীর হয়ে গেলো, কিন্তু গল্পগুলো আসলে খুবই সাধারন। অনেকের মতামতও পেয়েছি যে তাদেরও অনেকেরই আছে একই বা প্রায় কাছাকাছি গল্প। সেটাই তো আমি বলতে চেয়েছিলাম। খুবই সাধারন প্রত্যেকের গল্প, আবার প্রত্যেকের নিজের কাছে যা অসাধারন। এটাই তো স্রষ্টার এক বিরাট খেলা। আমরা শুধুই ক্রীড়ানক।

Copyright 2013. All rights reserved.

Web Hosting by Yahoo!